Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

সার ডিলার

৭নং আইলচারা ইউনিয়ন পরিষদের সার ডিলার এর তালিকা

মোঃ মজিবার রহমান গ্রাম,বড় আইলচারা ডাকঘর,পোড়াদহ, উপজেলা,কুষ্টিয়া জেলা,কুষ্টিয়া

বর্তমান ইউরিয়া সারের দাম কমিয়ে ১৬ টাকা কেজি করা হয়েছে। বস্তা প্রতি রেট ৮০০ টাকা

ফসফেট ও পটাশ সার পাওয়া যায়।

সার

সার  প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম উৎসের জৈব ও অজৈব বস্ত্ত (চূনাকরণ বস্ত্ত ব্যতীত), যা গাছের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য এক বা একাধিক পুষ্টি উপাদান মৃত্তিকাতে সরবরাহ করে। যেকোন অজৈব লবণ, যেমন- অ্যামোনিয়াম সালফেট বা জৈব বস্ত্ত, যেমন- ইউরিয়া, যা গাছের পুষ্টি উপাদান সরবরাহের মাধ্যমে শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ব্যবহূত হয় সেসব বস্ত্তকে ‘বাণিজ্যিক’ সার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সুনির্দিষ্টভাবে তিন প্রকারের সার আছে: রাসায়নিক সার, জৈব সার এবং জীবাণু সার। পৃথিবীব্যাপী কৃষিকাজে ব্যবহূত সামগ্রীর মধ্যে সারই সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বস্ত্ত। সাংশ্লেষিক সারে অধিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে। প্রকৃতিতে পাওয়া যায় এমন অজৈব বস্ত্তও পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। ফলশ্রুতিতে শস্যের প্রয়োজন মিটানোর জন্য প্রাকৃতিক জৈব বস্ত্তর তুলনায় কম পরিমাণে সারের প্রয়োজন হয়।

মৃত্তিকা গাছের পুষ্টি উপাদান সরবরাহকারী প্রধান মাধ্যম। গাছের জন্য প্রয়োজনীয় ১৭টি অপরিহার্য মৌলের মধ্যে গাছ মৃত্তিকা থেকে ১৪টি মৌল পেয়ে থাকে। কিন্তু মৃত্তিকাগুলো পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করার স্বাভাবিক ক্ষমতায় যথেষ্ট পার্থক্য প্রদর্শন করে। পুষ্টি উপাদান সরবরাহের এ ক্ষমতা সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে, কারণ উচ্চফলনশীল জাতের শস্যের নিবিড় চাষাবাদ, অতি সামান্য বা জৈব বস্ত্ত ব্যবহার না করা এবং অযথাযথ মৃত্তিকা ও শস্য ব্যবস্থাপনা। অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে শস্যগুলো পুষ্টি উপাদান ঘাটতির সম্মুখীন হয়, যা শস্যের উৎপাদন ও গুণ হ্রাসে প্রতিফলিত হয়। সে কারণে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়ার জন্য সার প্রয়োগের মাধ্যমে মৃত্তিকাতে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করার প্রয়োজন হয়।

শস্যের ফলন বৃদ্ধি করতে প্রয়োগকৃত গাছপালা ও প্রাণিজ উৎসজাত বস্ত্তকে জৈব সার বলা হয়। প্রক্রিয়াহীন বা প্রক্রিয়া করা অবস্থায় এসব বস্ত্ত সাধারণত অধিক আয়তন দখল করে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রকার জৈব সার মৃত্তিকাতে প্রয়োগ করা হয়। অতীতকালে বাংলাদেশে শস্য উৎপাদনের জন্য প্রধানত জৈব সার ব্যবহার করা হতো। ১৯৬০-এর দশকে রাসায়নিক সার আগমনের সাথে সাথে জৈব সারের ব্যবহার প্রথমে ধীরে ধীরে এবং পরবর্তী সময়ে আকস্মিকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। তৎসত্ত্বেও জৈব সারের মধ্যে প্রাণিজ সার, কম্পোস্ট (বিভিন্ন জৈব উপাদানে প্রস্ত্তত সার), সবুজ সার ও জীবাণু সার বাংলাদেশে ব্যবহূত হয়।

বর্তমান কৃষিতে শস্য উৎপাদন সিস্টেমের জন্য সার অপরিহার্য। শস্য উৎপাদন প্রভাবকারী নিয়ামকের মধ্যে ফলন বৃদ্ধিতে সার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রকৃত অর্থে, বাংলাদেশ কৃষির উৎপাদন সিস্টেমে সফলতা অজৈব সারের উপরই নির্ভরশীল। কারণ, মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশের জন্য এসব সারই দায়ী। তৎসত্ত্বেও, শস্য উৎপাদনে সারের অবদান শস্য, শস্যের নিবিড়তা, ঋতু, মৃত্তিকা বৈশিষ্ট্য ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির ওপরও নির্ভর করে।

বাংলাদেশে পঞ্চাশ দশকের গোড়ার দিকে গাছের পুষ্টি উপাদানের সম্পূরক উৎস হিসেবে রাসায়নিক (অজৈব) সার প্রবর্তন করা হয়েছিল। কিন্তু আধুনিক জাতের শস্যের প্রবর্তন ও সম্প্রসারণ এবং সেচ সুবিধা সৃষ্টির সাথে সাথে ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে নিয়মিতভাবে এসব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছিল। সার ব্যবহার বৃদ্ধির প্রবণতা, বিশেষ করে ইউরিয়া-নাইট্রোজেনের ব্যবহার বৃদ্ধি এখনো বহাল আছে।

১৯৮০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের মৃত্তিকাতে সার থেকে তিনটি প্রাথমিক মুখ্য পুষ্টি উপাদান- নাইট্রোজেন (N), ফসফরাস (P) এবং পটাশিয়াম (K) এবং অমুখ্য পুষ্টি উপাদান ক্যালসিয়াম (Ca) সরবরাহ করা হতো। সালফার (S) ও জিঙ্কের (Zn) গুরুত্ব, বিশেষ করে ধান চাষে এদের গুরুত্ব আশির দশকের গোড়ার দিকে শনাক্ত করা হয়েছিল। জিপসাম, জিঙ্কসালফেট এবং জিঙ্ক অক্সি-সালফেট থেকে সালফার ও জিঙ্ক সরবরাহ করতে এসব সার প্রবর্তন করা হয়েছিল। ইদানিংকালে, কিছু কিছু মৃত্তিকা ও শস্যে ম্যাগনেসিয়াম (Mg) ও মলিবডেনামের (Mo) ঘটতি দেখা যাচ্ছে। এসব পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে ভবিষ্যতে যথাযথ সার ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে।

সারের মধ্যে নাইট্রোজেনের ব্যবহারই প্রধান অবস্থান দখল করে আছে। এর কারণগুলো হলো মৃত্তিকাতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কম এবং শস্যের বৃদ্ধিতে নাইট্রোজেন সংবলিত সারের দৃশ্যমান প্রভাব অতি দ্রুত দেখা যাওয়ার কারণে এ সার কৃষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে। অন্যান্য সার কম দৃষ্টি আকর্ষণ করার কারণ হলো এদের প্রভাব সাধারণত কম দেখা যায়, যদিও এদের প্রয়োজনকে অস্বীকার করা যায় না।

বিভিন্ন প্রকারের জৈব সার মৃত্তিকাতে প্রয়োগ করা হয়, যেমন- গোবর, মূত্র, মুরগির বিষ্ঠা, খামারজাত সার, কম্পোস্ট, শুষ্ক রক্ত, হাড়ের গুড়া, মৎস্যজাত সার (fish meal), বাদামের খৈল, খৈল, ধইঞ্চা, সানহ্যাম্প, গোমটর, মাষকলাই, মুগডাল, ধান ও গমের খড়, আখের পাতা, আগাছা, ছাই, ইত্যাদি। এসব বস্ত্তর মধ্যে প্রাণিজ সার, কম্পোষ্ট, সবুজ সার ও খৈল সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।

নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও কার্বন সরবরাহ করতে এসব মৌলের চক্রায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জীবন্ত বা সুপ্ত সুনির্দিষ্ট অণুজীবের উপজাত (strain) সাধারণত জীবাণুসার হিসেবে পরিচিত। নীল-সবুজ শৈবাল (BGA), রাইজোরিয়াম, অ্যাযোটোব্যাকটার, অ্যাযোম্পিরিলাম, ভেসিকুলার আরবুসকুলার মাইসারাইজাল (Vesicular Arbuscular Mycerrhizal) ছত্রাক এবং ফসফব্যাকটারিন পরিচিত কিছু জীবাণুসারের উদাহরণ, ডালজাতীয় শস্য ও অন্যান্য সীম জাতীয় গাছের জন্য রাইজোরিয়াম এবং ধানের জন্য অ্যাযোলার (Azolla) সঙ্গে নীল-সবুজ শৈবাল ব্যবহারের উপকারিতা অনেক পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রতিপাদন করা হয়েছে, কিন্তু খামার পর্যায়ে এদের ব্যবহার এখন পর্যন্ত ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হয় নি।